আটশো টাকার নেটফিক্স

October 26, 2020

বিয়ের পরে আমাদের দুইজন কেই বাসা থেকে বের করে দেয়া হয়েছিল, অন্য ধর্মের মানুষ বিয়ে করাটাকে আমাদের দুইজনের ফ্যামিলিই ভালো চোখে দেখেনি।

কিন্তু আমরা সেটা নিয়ে খুব বেশি দু:খ টু:খ পাইনি, আমরা দুইজনই ব্যাংকে ভাল পোস্টে চাকরি করতাম, মাস শেষে লাখের উপরে টাকা আমাদের একাউন্টে ঢুকত, সেইটা নিয়ে আমরা বসুন্ধরায় একুশ হাজার টাকা দিয়ে একটা বাসায় থাকতাম।

দু:খ টু:খ খুব একটা ছিলনা আমাদের, মাসে আটশো টাকার নেটফিক্স, পাঁচশ টাকার স্পটিফাই অফিস শেষের ক্লান্ত জীবনটাকে চাঙা করে দিত, শনি সোম বুধে অফিস থেকে এসে আমি রান্না করতাম, রবি মঙ্গল বৃহস্পতিতে অপর্ণা।

শুক্রবার টা আমাদের জন্য স্পেশাল ছিল, দুইজনেরই ছুটি। ঘুম থেকে উঠে দুপুর, যমুনা ফিউচার পার্কের তাবাকে গিয়ে আমরা ব্রেকফাস্ট করতাম, এরপর একটা সিনেমা - ব্লকবাস্টারে। মাসের শুরু হলে, সিনেমা শেষে ফ্যান্সি কোন রেস্টুরেন্টে, মাসের শেষে বাজেট ৬০০ টাকা

একটা ফ্রিজ ছাড়া, সেরকম কোন আসবাবপত্র কিনি নি আমরা, প্রয়োজন হয়নি - কেউ আসেনা আমাদের বাসায়, এভয়েড করে। কিন্তু সেসব নিয়ে খুব দু:খ টু:খ ছিলনা আমাদের। আমরা হিসেব করে টাকা খরচ করতাম, ভালবাসাটায় হিসাব করতাম না।

মাঝে মাঝে আমরা একজন আরেকজন কে জড়িয়ে ধরে ঘন্টার পর ঘন্টা বসে থাকতাম, কেউ তখন কোন কথা বলতাম না, কারো চোখ দিয়ে পানি পড়লেও মুছে দিতাম না, পড়ুক একটু। আসলে একটু দু:খ আছে, সেটা থাকুক।